চট্টগ্রামে কোরবানির পশুর চামড়া স্থানীয়ভাবে সংরক্ষণ করার উদ্যোগ

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেছেন, “পবিত্র ঈদ-উল আযহার কোরবানির চামড়া স্থানীয়ভাবে ৭ থেকে ১০ দিন সংরক্ষণ করতে হবে। চামড়া যেন বর্ডার ক্রস না করে সে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বেও সাথে দেখতে হবে।” আজ ১২ জুন বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে পবিত্র ঈদ-উল আযহা উপলক্ষে জাতীয় সম্পদ কাঁচা চামড়া সংরক্ষণ, ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহনসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত প্রস্তুতিমূলক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় চট্টগ্রামের প্রতিটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন। তারা উপজেলা পর্যায়ে চামড়া সংরক্ষণের বিষয়ে তাদের মতামত প্রদান করেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, “চামড়া অবশ্যই নির্দিষ্ট শেডের মধ্যে সংরক্ষণ করতে হবে। আগামী জুম্মায় ইমাম সাবেবরা খুতবায় চামড়া সংরক্ষণের বিষয়ে বলবেন। প্রত্যেক উপজেলায় দুই থেকে তিনটা জায়গায় চামড়া সংরক্ষণ করতে হবে। সে বিষয়ে আপনাদের গুরুত্ব দিতে হবে। মহানগরীর চামড়াগুলো ডিসি পার্কের পাশে ওয়ারলেস মাঠে নির্দিষ্ট শেড তৈরী করে সংরক্ষণের বিষয় উল্লেখ করেন ডিসি। দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ বলেন, “কোরবানি আসলেই কিছু মৌসুমী ব্যবসায়ী তৈরি হয়। তারা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে চামড়াগুলো কম দামে কিনে নেয়। এতে প্রকৃত চামড়া ব্যবমায়ীরা বিপাকে পড়ে যান। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এদের বিষয়ে তৎপর হতে হবে। যদি চামড়া শিল্পকে আমরা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারি তাহলে অর্থনৈতিকভাবে অনেক সমৃদ্ধ হবো।”

সভায় জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, “চট্টগ্রামে গবাদি পশুর চাহিদা ৮ লক্ষ ৮৫ হাজার কিন্তু মজুদ রয়েছে ৮ লক্ষ ৫২ হাজার ৩৫৯টি গবাদি পশু। খাগড়াছড়িসহ তিন পার্বত্য জেলা ও উত্তর বঙ্গ থেকে প্রতি বছর চট্টগ্রামে গবাদি পশু আসে। কোরবান উপলক্ষে ঐসব এলাকা থেকে এ বছরও প্রায় ৫০ হাজার গবাদি পশু আসবে। তাই আসন্ন ঈদ-উল আযহায় গবাদি পশু ঘাটতির কোন সম্ভাবনা নেই।” সভায় বিসিক চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপ মহাপরিদর্শক (ডিজিএম) নিজাম উদ্দিন বলেন, “৬৩ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ লবণ উৎপাদন করেছি। সাড়ে ৭ হাজার মেট্রিক টন লবণ প্রয়োজন। সাড়ে ২১ হাজার লবণ মজুদ রয়েছে আমাদের। লবণের কোনো সংকট নেই।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সাদি-উর রহিম জাদিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) একেএম গোলাম মোরশেদ খান, দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, বিসিক চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপ মহাপরিদর্শক (ডিজিএম) নিজাম উদ্দিন, জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ নজরুল ইসলাম, সিএমপি’র এসি (ক্রাইম) মোঃ নুরুল ইসলাম সিদ্দিক, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমওসিএস ডা. মোহাম্মদ নওশাদ খান, জেলা প্রাণি হাসপাতালের ভিএস ডা. হোসনে আরা বেগম, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ’র চেয়ারম্যানপেয়ার মোহাম্মদ, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ’র উত্তর দক্ষিণ জেলার সদস্য সচিব আশেক রসুল খান বাবু, সহকারী জেলা আনসার কমান্ডার ফরিদা পারভীন, আল মানাহিলের কর্মকর্তা মোঃ আবদুর রহিম, লবণ মিল মালিক সমিতির কর্মকর্তা মোহাম্মদ বখতিয়ার, সাদেক মোহাম্মদ, মোহাম্মদ নুরুল আমিন, বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়ৎদার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম, সহ-সভাপতি আবদুল কাদের, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ ইকবাল বাহার চৌধুরী প্রমূখ।

Recommended For You