আল আমিন মুন্সী, নরসিংদী
নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাহিদ হাসান মাইনুলের নেতৃত্বে একই ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি দুলাল মিয়ার বাড়িঘরে হামলার অভিযোগ উঠেছে। এসময় ওই যুবলীগ নেতাকে বাড়িতে না পেয়ে তার স্ত্রী শাহানাজ বেগমকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করা সহ তার শিশু সন্তানসহ তিন জনকে এলোপাতারি পিঠিয়ে গুরুত্বর আহত করার পাশাপাশি বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করার অভিযোগও উঠেছে। বুধবার রাতে উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের কাজীরচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রক্তাক্ত শাহানাজ বেগম পার্শ্ববর্তী কালীগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার বাম হাতে তিনটি সেলাই লেগেছে বলে জানিয়েছে শাহানাজ বেগমের ভাই নাহিম। তিনি নিজেও ওই হামলায় গুরুত্বর আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রায় ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে পলাশ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ভুক্তভোগি শাহানাজ বেগম। থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে ছাত্রলীগ নেতা নাহিদ হাসান মাইনুলসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনী আরও বেপরোয়া হয়ে উঠারও অভিযোগও করেন ভুক্তভোগী পরিবার। তাদের দাবি, থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে ছাত্রলীগ নেতা নাহিদ হাসান মাইনুলসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনী কয়েক ঘন্টা পর পর দলবল নিয়ে এসে বিভিন্ন ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। তাদের ভয়ে শাহানাজ বেগমের স্বামী ও ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা দুলাল মিয়া বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
শুক্রবার দুপুরে ভুক্তভোগি শাহানাজ বেগম জানান, শুনেছি, মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে স্থানীয় আওয়ামীলীগের একটি প্রোগ্রামকে কেন্দ্র করে আবদুল রশীদ মিয়ার সাথে নাকি একটু কথাকাটাকাটি হয়েছিল। তবে ঘটনাটি ওইদিন-ই স্থানীয় নেতারা সমাধান করে দেয়। কিন্তু এর জের ধরেই বুধবার রাতে ডাঙ্গা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাহিদ হাসান মাইনুলের নেতৃত্বে টুটুল মিয়া, মামুন ও মাসুমসহ প্রায় ১৫ থেকে ১৬ জন লোহার পাইপ ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের বাড়িতে এসে আমার স্বামী দুলাল মিয়াকে খুঁজতে থাকে। তখন আমি তাদের বলি, তিনি বাড়িতে নাই। এরপরই মাইনুল ও টুটুল বলতে থাকে যে চেয়ারম্যান সাবের উল হাই নির্দেশ দিয়েছে তোদের হাত,পা ভেঙে যাওয়ার জন্য। এরপর পরই তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়। এসময় বাধা দিতে এলে আমার দশ বছর বয়সী মেয়ে জুই , ভাই নাহিমকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে বাড়িঘর ভাংচুরসহ লুটপাট করে। আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। অভিযুক্ত ডাঙ্গা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাহিদ হাসান মাইনুলের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও মুঠোফোনটি বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া যায় নি। এ বিষয় জানতে চাইলে ডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ডাঙ্গা ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবের উল হাই বলেন, এসব নোংরা রাজনীতি আমার পছন্দ না। শুনেছি, যুবলীগ নেতা দুললা মিয়া গত মঙ্গলবার স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রোগ্রামে তার সাথে যোগদান না করায় স্থানীয় লোকজনকে মারধর করেছিল। এছাড়া তার স্ত্রীকে মারধর করার ঘটনাটি পুরোই সাজানো। ঘটনাটির নিন্দা জানিয়ে ডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এসময়টাতে আমরা সবাই একত্রি হয়ে কাজ করার কথা। অথচ ইউপি চেয়ারম্যান তার আধিপত্য বিস্তার করতে এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন। ওনি চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই স্থানীয় আওয়ামীলীগের সকল সহযোগি সংগঠনের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে বিভাজন তৈরি করে সংগঠনটিকে দুর্বল করে তুলেছেন। যা সত্যি খুবই দুঃখজনক। এ ব্যাপারে পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান,বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর ও মারধর করার কোনো ঘটনা আমার জানা নেই। তবে এমন ঘটনা ঘটে থাকলে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।